লেখকঃ ডঃ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব
প্রকাশনীঃ হাদীছ ফাউণ্ডেশন বাংলাদেশ
মহান সৃস্টি কর্তা আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আপন কুদরতে দুনিয়া সৃস্টির পর মানব জাতির প্রতিনিধি সাবস্ত করে হযরত আদম আঃ ও বিবি হাওয়া আঃ যুগলকে দুনিয়াতে অবতীর্ণ করান। মানব জাতির জন্য আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত বিধান সমূহ প্রচার ও প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন স্বীয় অনুগ্রহে হযরত আদম (আঃ) থেকে আখেরী পয়গম্বর হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) পর্যন্ত যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূল আঃ প্রেরন করেন। তাদের মধ্য থেকে মাত্র ২৫ জন নবী-রাসূলগনের নাম আল্লাহ পবিত্র কুরআনে গুরুত্ত্বের সাথে উল্লেখ করেছেন। সত্যের পথে তাঁদের দৃঢ়চিত সংগ্রামের হৃদয়গ্রাহী সংগ্রামের বর্ণনা করে মানবতার সামনে সত্য ন্যায় ও সুন্দরের অনুপম মানদণ্ড উপস্থাপন করেছেন। কোরআনে পাকে বর্ণিত এসব কাহিনী কেবল চিত্ত বিনোদনের খোরাক নয়, বরং এক অবিরাম বিচ্ছুরিত আলোকধারা, যার প্রতিটি কণায় বিকশিত হয় মানবতার সর্বোচ্চ নমুনা। নবী ও রাসূলগণের জীবনালেখ্য জানা ও তা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা আমাদের মুসলমানদের অপরিহার্য কর্তব্য। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি বাংলায় নবীগনের বস্তুনিষ্ঠ ইতিহাস খুবই দুর্লভ। তাই বিষয়টির গুরুত্ত্ব উপলব্ধি করে প্রফেসর ডঃ মুহাম্মদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব এই মুল্যবান ইতিহাস গ্রন্থটি সঙ্কলন করেন।
এই বইটির বিশেষত্ব হচ্ছে-
ঘটনা মূলক বর্ণনা পদ্ধতি মূল বিষয় বস্তু আত্মস্থ করতে শ্রোতা ও পাঠকগণকে খুব দ্রুত আকৃষ্ট করে। মানুষের বিচার-বুদ্ধি, প্রকৃতি ও স্বভাবের উপর এর সফল প্রভাব পরে। ফলে সহজেই ঘটনা হতে শিক্ষা গ্রহণ করা যায় এবং তার উপর আমল করা যায়। এ জন্য রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) অনেক সময় সাহাবায়ে কেরামদের জন্য ঘটনা মূলক উদাহরণ পেশ করতেন।
বইটিতে কুরআনের বিভিন্ন স্থানে বর্ণিত ঘটনা ও বক্তব্য সমূহ একত্রিত করে কাহিনীরূপ প্রদান করা হয়েছে। সেই সাথে বিশ্বস্ত তাফসীর,হাদীস ও ইতিহাস গ্রন্থ’ সমূহ থেকেও উদ্ধৃত করা হয়েছে। নবীদের কাহিনীর নামে প্রচলিত কেচ্ছা-কাহিনী ও ইসরাইলী উপকথা সমূহ হ’তে বিরত থেকে সহীহ বর্ণণাসমূহ দ্বারা বইটি সমৃদ্ধ হয়েছে।
এর সবচেয়ে মূল্যবান সংযোজন হল আম্বিয়া কেরামের জীবনী থেকে বর্তমান বিশ্বের প্রেক্ষাপটে শিক্ষনীয় বিষয় সমূহ তুলে ধরা হয়েছে।
কুরআনে যে ২৫ জন নবীর(আ) নাম বর্ণণা করা হয়েছে:
আদম(আ), নূহ(আ), ইদরীস(আ), হূদ(আ), ছালেহ(আ), ইবরাহীম(আ), লূত(আ), ইসমাঈল(আ), ইসহাক(আ), ইয়াকূব(আ), ইউসুফ(আ), আইয়ূব(আ), শু‘আয়েব(আ), মূসা(আ), হারূণ(আ), ইউনুস(আ), দাঊদ(আ), সুলায়মান(আ), ইলিয়াস(আ), আল-ইয়াসা(আ), যুল-কিফ্ল(আ), যাকারিয়া(আ), ইয়াহ্ইয়া(আ), ঈসা (আ) ও আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।
বইটি দুই খণ্ডে সম্মানিত এসকল আম্বিয়া আলাইহিমুস সালামের কাহিনী আলোচনা করা হয়েছে।
পরিশেষে বলা যায়, “নবী কাহিনী” একটি নির্ভরযোগ্য তথ্যবহুল বই। আশা করা যায়, এর মাধ্যমে পাঠক সমাজ মানবজাতির প্রাচীন ইতিহাসের পাদপীঠে নিজেদের নতুনভাবে মূল্যায়ন করতে সক্ষম হবেন এবং নবীদের(আ) উন্নত জীবনকে উত্তম আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করার প্রেরণা লাভ করবেন।
আল্লাহতাআলা বলেন : ‘তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে শিক্ষণীয় বিষয়, এটা কোন মনগড়া কথা নয়, কিন্তু যারা বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের জন্যে পূর্বেকার কালামের সমর্থন।‘ [সূরা ইউসুফ : ১১১]।
“আল্লাহ যার কল্যাণ চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন”। (বুখারী)
মানব জাতির শেষ্ঠ মানুষ নবীদের(আ) জীবনী পাঠ করি, আল্লাহ আমাদের এই সকল কাহিনী ও ঘটনা থেকে উপকৃত হওয়ার তাওফিক দান করুন, আমিন।