বই : হাদীসের পরিভাষা। | |
ড. মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন | |
ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ | |
মহান আল্লাহর বাণী আল-কুরআন এবং মহানবী (সা)-এর কঁথা, কর্ম ও অনুমোদন তথা সুন্নাহই হচ্ছে মুসলিম জীবনের চলার পাথেয়। জীবনের চলার পথে একজন মুসলমান তাই যে কোন সমস্যার সমাধান সন্ধান করেন পবিত্র কুরআন এবং মহান রাসূলের পথ-নির্দেশনার মাঝে। পবিত্র কুরআন হলো নীতি নির্ধারক, আর রাসূল (সা)-এর সুন্নাহ হলো এর সঠিক বাস্তবায়নের পন্থা। যে কাজ রাসূল (সা) যেভাবে করে দেখিয়েছেন, যেভাবে সাহাবা কিরাম (রা)-কে করতে নির্দেশ দিয়েছেন কিংবা সাহাবা কিরামের যে সমস্ত কাজকে তিনি মৌন অথবা সরব সম্মতিদান করেছেন, তারই নাম হলো সুন্নাহ-যা মুসলিম উম্মাহর জন্য অবশ্য পালনীয়।
আল্লাহ-রাসূলের প্রতি অবিশ্বাসী ও সুবিধাবাদী মানুষের কমতি ছিল না কোন যুগেই। হিজরী দ্বিতীয় শতক থেকে জাল ও বানোয়াট হাদীসের অস্তিত্ব ধরা পড়ল। কেউ ইসলামের মহান শিক্ষাকে বিকৃত করার উদ্দেশ্যে, কেউবা নিজেকে জাহির করতে, এমনকি কিছু লোক নিজের পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যেও মহানবী (সা)-এর নামে জাল হাদীস রচনা করল।
হিজরী তৃতীয় ও চতুর্থ শতকে একদল নিবেদিতপ্রাণ হাদীস গবেষক মহানবী (সা)-এর সমস্ত হাদীসকে যাচাই-বাছাই করে বিশুদ্ধ হাদীসসমূহকে একত্র করার কাজ শুরু করেন এবং একইসঙ্গে হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধ যাচাই বাছাই করার জন্য কিছু নীতিমালা প্ৰস্তুত করলেন। তাঁরা সাহাবা কিরাম (রা) থেকে শুরু করে নিজেদের সময়কাল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ হাজার হাদীস বর্ণনাকারীর জীবন বৃত্তান্ত, তথা জন্ম-মৃত্যু, শিক্ষাকাল, উসতাদগণের নাম, ছাত্রদের নাম, ব্যক্তিগত চরিত্র কার কেমন ছিল, কার স্মৃতিশক্তি কোন বয়সে কেমন ছিল ইত্যাদি সামগ্রিক বিবরণসহ এক বিশাল কর্ম সম্পাদন করেন। ‘আসমাউর রিজাল’ শীৰ্ষক এ ধরনের পুস্তক আজও সারা পৃথিবীর সব ধর্মাবলম্বীর কাছেই বিস্ময়কর। কেউই পারেনি মুসলমানদের এ বিশাল কর্মের অনুরূপ কোন কর্ম সম্পাদন করতে।
রিয়াদস্থ ইবন সাউদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলমে হাদীসের অধ্যাপক ড. মাহমুদ আত-তাহহান হাদীসের শুদ্ধাশুদ্ধ নিরূপণের মানদণ্ড ‘তাইসীরু মুস্তালাহুল হাদীস’ শীৰ্ষক এ পুস্তকটি আরবিতে রচনা করেন। বাংলাভাষী সুধী পাঠকবৃন্দ সমীপে সহীহ হাদীস চেনার মানদণ্ড হিসেবে পুস্তকটি বাংলায় অনুবাদ করেছেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ জামালউদ্দীন এবং সম্পাদনা করেছেন অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. নূরুল আলম।