ইসলাম বলেছে, নারী তার ঋতু চলাকালীন সময়ে কেবল ইবাদত থেকে বিরত থাকবে। অন্য সব কাজ স্বাভাবিকভাবেই করতে পারবে। এমনকি স্বামী তার সঙ্গে এক প্লেটে খাবারও খেতে পারবে। এ বিষয়ে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা নেই। বরং এখানে ইসলামে নারীর অনন্য মর্যাদার বিষয়টি ফুটে উঠে।
হাদিসে এসেছে, প্রসিদ্ধ সাহাবী হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সাদ রা. বলেন, আমি একবার রাসুল সা. কে হায়েজগ্রস্ত নারীর সাথে একপ্লেটে খাবার খাওয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলাম। তিনি বললেন, তুমি তার সাথেই খাবার খাও (এতে কোনো সমস্যা নেই)।
এ ব্যাপারে হজরত আনাস রা. ও আয়েশা রা. থেকেও একই বিষয়ে হাদিস বর্ণিত রয়েছে। ইমাম তিরমিজি রহ. বলেন, সাধারণভাবে সকল আলেমের অভিমত হলো, হায়েজা নারীর সাথে খাবার খেতে কোনো অসুবিধা নেই। (তিরমিজি, হাদসি : ১৩৩)
সা’দ ইবনু হাফস (রহঃ)...... উম্মে সালমা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে একই চাঁদরের নীচে শায়িত অবস্থায় আমার হায়য দেখা দিল। তখন আমি চুপিসারে বেরিয়ে এসে হায়যের কাপড় পরে নিলাম। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেনঃ তোমার কি হায়য শুরু হয়েছে ? আমি বললামঃ হাঁ। তখন তিনি আমকে ডেকে নিয়ে তাঁর চাঁদরের নিচে স্থান দিলেন। বর্ণনাকারী যায়নাব (রহঃ) বলেনঃ আমাকে উম্মে সালমা (রাঃ) এও বলেছেন যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম রোযা রাখা অবস্থায় তাকে চুমু খেতেন। [উম্মে সালমা (রাঃ) আরও বলেন] আমি ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একই পাত্র থেকে পানি নিয়ে জানবাতের গোসল করতাম। গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ) অধ্যায়ঃ ৬/ হায়য হাদিস নম্বরঃ ৩১৬
ইব্রাহীম ইবনু মূসা (রহঃ)....... উরওয়া (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তাঁকে (উরওয়াকে) প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, ঋতুবতী স্ত্রী কি স্বামীর খিদমত করতে পারে? অথবা গোসল ফরয হওয়া অবস্থায় কি স্ত্রী স্বামীর নিকটবর্তী হতে পারে? উরওয়া জওয়াব দিলেন, এ সবই আমার কাছে সহজ। এ ধরনের সকল মহিলাই স্বামীর খিদমত করতে পারে। এ ব্যাপারে কারো অসুবিধা থাকার কথা নয়। আমাকে আয়িশা (রাঃ) বলেছেন যে, তিনি হায়যের অবস্থায় ররাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর চুল আঁচড়ে দিতেন। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফ অবস্থায় মসজিদ থেকে তাঁর (আয়িশার) হুজরার দিকে তাঁর কাছে মাথাটা বাড়িয়ে দিতেন। তখন তিনি মাথার চুল আঁচড়াতেন অথচ তিনি ছিলেন ঋতুবতী। গ্রন্থঃ সহীহ বুখারী (ইফাঃ) অধ্যায়ঃ ৬/ হায়য হাদিস নম্বরঃ ২৯২
হাদিসটির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি নারীর ঋতু চলাকালীন সময়ে তাকে অপবিত্র ভেবে দূরে রাখা অন্যায়। তাকে অপবিত্র এমন মনে করে দৃষ্টিকটু ইঙ্গিত করাও অন্যায়, বরং সে পবিত্র। কেবল এ কারণে তাকে ইবাদত থেকে দূরে রাখতে হবে অন্য কোনো কাজে নয়।