Probondo

Kitab


অভিভাবক ছাড়া বিয়ে



এক মহিলা অভিভাবকের অনুমতি ছাড়া আইনজীবীর মাধ্যমে বিবাহ করেন এবং হানাফী মাযহাব অনুসারে তাদের বিয়ে হয়েছে বলেন। তিনি তার এ বিয়ে সম্পর্কে সালিহ আল মুনাজ্জিদের (হাফি.) মতামত জানতে চান।
জবাবে সালিহ আল মুনাজ্জিদ (হাফিঃ) প্রথমে তিনি তিরমিযির হাদীস তুলে ধরেনঃ
আবূ মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, অভিভাবক ব্যতীত বিয়ে সম্পন্ন হতে পারে না।
[তিরমিযি হা: ১১০১ সহীহ, ইরওয়া’আল-গালীল (১৮৯৩)]
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে কোন মহিলা তার ওলীর অনুমতি ব্যতিরেকে বিয়ে করবে তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল, তার বিবাহ বাতিল।
[তিরমিযি ১১০২ নং হাদীস, সহীহ ইরওয়া’আল-গালীল (১৮৪০)]
এরপর বলেন, আপনার এই উক্তি যে বিবাহটি আবূ হানীফা (রঃ) এর মাযহাব অনুযায়ী হয়েছে তাতে (আল্লাহর) বিধানের সামান্যতমও হেরফের করে না, কারণ কারও মতামত রাসূল (সাঃ) এর কথার চেয়ে অধিকগুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না, আর রাসূল (সাঃ) এর বিধান যা আপনি জেনেছেন যে, কোন মহিলা নিজের বিয়ে নিজেই দিতে পারেন না এবং কোন মহিলা যদি নিজে নিজে বিয়ে করেন সেই বিয়ে বাতিল।
এরপর শাইখ আহমাদ শাকির (রহঃ) এর বক্তব্য তুলে ধরেন। আহমদ শাকির এ বিষয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেনঃ
“বিদ্বানদের মধ্যে কেউই এই হাদীস – ‘অভিভাবক ব্যতীত বিয়ে সম্পন্ন হতে পারে না।’ – তার সহীহ হওয়া নিয়ে সন্দেহ পোষন করেননি, এটি সহীহ সনদে প্রমাণিত এবং যা প্রায় মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌঁছেছে। সকল বিদ্বানগণ এ মত পোষন করেন যা কুরআন দ্বারা সমর্থিত এবং যতদুর জানি হানাফীগণ ও তাদের অনুসারীগণ ব্যতীত কেউই দ্বিমত পোষন করেননি। শুরুর দিকের হানাফীগণের কৈফিয়ত গ্রহনযোগ্য হবে কারন হয়তো সেসময় হাদীসটি সহীহ সনদে তাদের নিকট পৌঁছায়নি। কিন্তু তাদের মধ্যে পরবর্তীগণ যারা রয়েছেন, তারা দলীয় গোঁড়ামির শিকার হয়েছেন, এবং আপ্রাণ চেষ্টা করেছেন হাদীসটিকে দুর্বল বানাতে অথবা কোন প্রমাণ ব্যতিরেকেই হাদীসের অপব্যাখ্যা করেছেন।
এবং এর ফলে আমরা দেখি যে – অনেক মুসলিম দেশ যেখানে হানাফী মাযহাব অনুসরণ করা হয় সেখানে এই বিষয়ে – নৈতিকতা, সামাজিক আচার আচরণ, এবং মানুষের মান সম্মানের উপর এর ভয়াবহ প্রভাব। তাতে বুঝা যায়, যে সমস্ত মহিলাগণ তাদের অভিভাবক ছাড়া বিবাহ করেছেন, তাদের বিয়ে শরীয়াহ অনুযায়ী বাতিল এবং তাদের সন্তানরাও অবৈধ।
আমি সকল দেশের মুসলিম বিদ্বান ও নেতাদের আহবান জানাই যে এ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি পুনঃবিচার করার জন্য এবং বিয়ের জন্য একজন জ্ঞানী ওয়ালীর প্রয়োজন যার ব্যাপারে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নির্দেশ প্রদান করেছেন সেই মতের দিকে ফিরে আসার জন্য। যার ফলে আমরা বহু বিপদজক কাজ যা মহিলারা তাদের অজ্ঞতা ও হঠকারিতা, এবং তাদের মিথ্যা স্বাধীনতার পিছনে দৌড়ানো, এবং নিজেদের খাম খেয়ালীর অনুসরণ করা, বিশেষকরে তাদের মাঝের বিভ্রান্ত শিক্ষিত শ্রেনীর কারনে সংঘঠিত হয়ে থাকে – তা এড়িয়ে যেতে পারবো। এসমস্ত কার্যকলাপ আমাদের হৃদয়কে দুঃখে ভারাক্রান্ত করে। আল্লাহ আমাদেরকে ইসলামের সঠিক পথে চালিত করুন ‍এবং আমাদের শেষ পরিনতি উত্তম করুন।” [মুখতাসার তাফসীর ইবনে কাসীর ১/২৮৬]
এরপর তিনি সমাপ্তি দিয়েছেন এভাবে বিয়ে বৈধ হয়নি, এবং তাদেরকে অভিভাবক ও দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতে পুনঃবিয়ে করার পরামর্শ দিয়েছেন।
মূল উৎসঃ  http://islamqa.info
লেখকঃ শাইখ সালেহ আল মুনাজ্জিদ (হাফিযাহুল্লাহু)        | 
প্রবন্ধটি পড়া হলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না।