উত্তর-এক:
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বৃষ্টি দেখতেন তখন বলতেন: “আল্লাহুম্মা, সায়্যিবান নাফিআ (হে আল্লাহ, এ যেন হয় কল্যাণকর বৃষ্টি)।[1] আবু দাউদের বর্ণনায় (নং ৫০৯৯) হাদিসটির ভাষা হচ্ছে- “আল্লাহুম্মা, সায়্যিবান হানিআ (হে আল্লাহ, এ যেন হয় তৃপ্তিদায়ক বৃষ্টি)।[2] الصيب (আল-সায়্যিব) শব্দের অর্থ হচ্ছে- প্রবহমান ও চলমান বারিধারা। শব্দটি صاب يصوب থেকে উদ্ভূত; যার অর্থ হচ্ছে- নামা। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন: أَوْ كَصَيِّبٍ مِنَ السَّمَاءِ (অর্থ- আকাশ থেকে অবতীর্ণ বারিধারার মত)[সূরা বাকারা, আয়াত: ১৯] এ শব্দটি فيعل এর ওজনে الصوب শব্দ থেকে গঠিত হয়েছে। [3]
বৃষ্টিতে বের হওয়া, শরীরের কিছু অংশ বৃষ্টিতে ভেজানো সুন্নত। আনাস (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে এসেছে তিনি বলেন: একবার আমরা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সাথে ছিলাম; তখন আমাদেরকে বৃষ্টি পেল। তিনি বলেন: তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর গায়ের পোশাকের কিছু অংশ সরিয়ে নিলেন যাতে করে গায়ে বৃষ্টি লাগে। তখন আমরা বললাম: ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি কেন এমনটি করলেন? তিনি বললেন: “কারণ বৃষ্টি তাঁর প্রতিপালকের কাছ থেকে সদ্য আগত”।[4] যখন প্রবল বৃষ্টি হত তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলতেন: “আল্লাহুম্মা হাওয়ালাইনা, ওয়া লা আলাইনা, আল্লাহুম্মা আলাল আ-কাম ওয়ায যুরাব ওয়া বুতুনিল আওদিআ ওয়া মানাবিতিস শাজার” (অর্থ- হে আল্লাহ! আমাদের আশপাশে বৃষ্টি দিন, আমাদের উপরে নয়। হে আল্লাহ! পাহাড়-টিলা, খাল-নালা এবং উদ্ভিদ গজাবার স্থানগুলোতে বৃষ্টি দিন।)[5]
পক্ষান্তরে, বজ্রপাত শুনে যে দুআ পড়তে হয়: আব্দুল্লাহ বিন যুবায়ের (রাঃ) থেকে সাব্যস্ত হয়েছে যে, তিনি বজ্রপাতের সময় কথা বন্ধ রাখতেন এবং বলতেন: وَيُسَبِّحُ الرَّعْدُ بِحَمْدِهِ وَالْمَلَائِكَةُ مِنْ خِيفَتِهِ (অর্থ- তাঁর প্রশংসা পাঠ করে বজ্র এবং সব ফেরেশতা, সভয়ে।)[সূরা রাদ, আয়াত: ১৩] এরপর বলেন: এটি দুনিয়াবাসীর জন্য চরম হুমকি।[6] এ বিষয়ে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত কোন মারফু হাদিস আমাদের কোন জানা নেই। অনুরূপভাবে আমাদের জানা মতে, বিজলি দেখলে পঠিতব্য কোন দুআ বা যিকিরও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে সাব্যস্ত হয়নি। আল্লাহই ভাল জানেন।
দুই:
বৃষ্টিপাতের সময় বান্দাদের উপর আল্লাহর রহমত, করুণা ও সম্পদের সচ্ছলতা নাযিলের সময়; তাই এটি দুআ কবুলের উপযুক্ত মওকা। সাহল বিন সাদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে- নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন: “দুইটি দুআ প্রত্যাখ্যান করা হয় না। আযানের সময়ের দুআ ও বৃষ্টির নীচের দুআ।” [7] হাদিসের বাণী والدعاء عند النداء অর্থ- আযানের সময় দুআ কিংবা আযানের পরের দুআ।
হাদিসের বাণী: وتحت المطر এর অর্থ হচ্ছে- বৃষ্টি নাযিলের সময়।
হাদিসের বাণী: وتحت المطر এর অর্থ হচ্ছে- বৃষ্টি নাযিলের সময়।
[1]সহীহ বুখারি, ১০৩২
[2]আলবানি হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন
[3]দেখুন: খাত্তাবীর ‘মাআলেমুস সুনান’ (৪/১৪৬)
[4]সহিহ মুসলিম (৮৯৮)
[5]সহিহ বুখারী (১০১৪)
[6]আদাবুল মুফরাদ (৭২৩), মুয়াত্তা মালেক (৩৬৪১) ইমাম নববী ‘আল-আযকার’ গ্রন্থে (২৩৫) এবং আলবানি ‘সহিহ আদাবুল মুফরাদ’ গ্রন্থে (৫৫৬) হাদিসটির সনদকে সহিহ বলেছেন
[7]হাকেম এর ‘মুস্তাদরাক’ (২৫৩৪), তাবারানী এর আল-মুজাম আল-কাবীর (৫৭৫৬), আলবানি সহিহুল জামে গ্রন্থে (৩০৭৮) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।
[2]আলবানি হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন
[3]দেখুন: খাত্তাবীর ‘মাআলেমুস সুনান’ (৪/১৪৬)
[4]সহিহ মুসলিম (৮৯৮)
[5]সহিহ বুখারী (১০১৪)
[6]আদাবুল মুফরাদ (৭২৩), মুয়াত্তা মালেক (৩৬৪১) ইমাম নববী ‘আল-আযকার’ গ্রন্থে (২৩৫) এবং আলবানি ‘সহিহ আদাবুল মুফরাদ’ গ্রন্থে (৫৫৬) হাদিসটির সনদকে সহিহ বলেছেন
[7]হাকেম এর ‘মুস্তাদরাক’ (২৫৩৪), তাবারানী এর আল-মুজাম আল-কাবীর (৫৭৫৬), আলবানি সহিহুল জামে গ্রন্থে (৩০৭৮) হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন।